অঞ্জন দত্ত, জন্ম: জানুয়ারি ১৯, ১৯৫৩, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত। আরো জানতে
এই ব্লগটা অঞ্জনের গান প্রেমীদের জন্য। আমার হাতে এখন অফুরন্ত সময়, অঞ্জনের গান শুনছি, ভাবলাম লিখে রাখি, পড়া যাবে কিন্তু তাও হচ্ছেনা। পায়ের সাথে চোখের সমস্যায়ও ভুগছি। শুনে শুনে লেখা তাই ভুল থাকবেই, ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

সুকাই চাচার ইশকুল

একমুঠো চাল, একমুঠো চাল
একমুঠো চাল দেবে কেউ?
শুধু এক মুঠো চাল দেবে, এক মুঠো চাল
এক মুঠো চাল দেবে কেউ?

এতে মাস্টার মশাইদের মাইনে দিতে হবে
কিনতে হবে চক-পেন্সিল
দিলে এক মুঠো চাল
দিলে তৈরি হবে সুকাই চাচার ইশকুল

ডানকুনির কাছে কাপাংশাড়িয়ার গ্রামে
৮০ বছরের যুবক
নীলচে সবুজ লুঙ্গিটা তার
ময়লা ছেঁড়া সাদা শার্ট


ঘুরে ঘুরে মরে ভিক্ষা করে
ঘরে ঘরে, রাস্তায়
কবে এক মুঠো চাল দিয়ে তৈরি হবে
তার স্বপ্নের ইশকুল এক

সুকাই চাচা করেনি লেখাপড়া কোনোদিন

একমুঠো চাল করে তিন হপ্তায়
১০৮ কেজি চাল
বেচে বাজারে গাঁথনি শুরু করে সে
ইশকুল বাড়ির দেওয়াল
আরো অনেক টাকা চাই, প্রায় এক লাখ
তবু ছাড়বে না চাচা যে হাল
সারাজীবন ধরে ইশকুলের জন্য
ভিক্ষে করে যাবে চাল
ইশকুলে ক্লাস বসে রোজ সকালে
আসে ১২৫ ছেলে-মেয়ে
তারা বাংলা শেখে, তারা উর্দু শেখে
শেখার আনন্দে শেখে
আছে মাস্টার মশাই, তারা মাইনেও পায়
ওই চাল বেচার টাকা থেকে
এখন সবাই মিলে দেখে স্বপ্ন সবাই
কাপাংশাড়িয়ার গ্রামে

সুকাই চাচা করেনি লেখাপড়া কোনোদিন
এটা সত্যি কথা গিয়ে হুগলি জেলায় দেখে নিন

রুবিনা রুপারেল

আসছি আমি রুবিনা
ভয় নেই কোনো আর
মানবো না আর শাসন
তোমার বাবা মা'র,
দরজা ভেঙে দিয়ে
তোমায় নিয়ে পালিয়ে
কাটাবো আজ সারাটা বিকেল

আগে অ্যাকোয়া জাভা
তারপর সিনেমা
চাইলে চিড়িয়াখানা
চাইলে নিকোপার্ক,
যত ইচ্ছে পিজ্জা
যত ইচ্ছে পেপসি
বেশি খিদে পেলে গ্র্যান্ড হোটেল

বিনা বিনা বিনা বিনা
রু বিনা বিনা বিনা বিনা
যাবে কি যাবে না
রুবিনা রুপারেল

আমার ক্লাস সেভেনের
জানলা পেরিয়ে
তুমি বসে বসে
ক্লাস ইলেভেনে,
কি যে হিজিবিজি
লিখে যাও সারাদিন
খেয়াল থাকেনা ছুটির বেল.
তোমার জন্য মনটা আমার
করে যে কেমন
একা একা বসে তুমি
টিফিন খাও যখন,
চলো যাই চলে এই
শহরটাকে ফেলে
চলো যাই ধরি তুফান মেল

বিনা বিনা বিনা বিনা
রু বিনা বিনা বিনা বিনা
যাবে কি যাবে না
রুবিনা রুপারেল

কিন্তু ঘরের দরজা
বন্ধ করে মা
ঘন্টা খানেক হলো
গ্যাছে যে বাজার,
সারা বিকেলটা
এই বন্দী থাকতে হবে
অ্যালজেবরাতে করেছি যে ফেল,
ঘরের দরজা বন্ধ হলেও
মনটা যে খোলা
চোখটা বুঝে ফেললে
কেউ আটকাতে পারবেনা,
মনে মনে তাই চলো
পালিয়ে চলে যাই
ইস্তাম্বুল কিংবা ইজরায়েল

বিনা বিনা বিনা বিনা
রু বিনা বিনা বিনা বিনা
যাবে কি যাবে না
রুবিনা রুপারেল




রং পেনসিল

ছিল সবুজ রঙের আকাশ আমার এক
ছিল হলুদ রঙের কত গাঙচিল
ছিল নীল রঙের কোকিল, লাল রঙের কাক
গেল কোথায়, গেল কোথায় পেনসিল
রং পেনসিল


ছিল হিজিবিজি আঁকার একটা খাতা
ছিল পালিয়ে যাবার রাস্তা পাতায় পাতায়
খুলে যেত মনের মাথার যাবতীয় খিল
আমার ছেলেবেলার রং পেনসিল


আজ সবই ক্রমশই ঘোলাটে
আজ যায় না দেওয়া ইচ্ছে মতো রঙ
আমার সত্যি কথার যন্ত্রণার জগতে
নেই মিথ্যে তুলে দেবার পেনসিল
রং পেনসিল


তবু যখন হয়ে যাবে সব শাদা
শাদা চাদর, সাদা ফুল, সাদা খই
তখন অন্য কোনো ঘরে, অন্য পাড়ায়
জানি আছে কারও হাতে রং পেনসিল

খাতা পেন্সিল

নেই খাতা পেন্সিল
নেই ইশ্কুলে যাওয়া নেই
নেই পাশ ফেল
তবু নাকে মুখে কালি আছে
সকাল বিকেল
আছে ডিজেলের ধুয়া
আছে মবিলের তেল।


যার আছে পেন্সিল
ইশ্কুলে যায়
লেখা, লেখা, লেখা পড়া করে যারা
গাড়ি ঘোড়া চড়ে যায়
আমার নেই পেন্সিল
গাড়ি জুটবেনা তাই
অন্যের গাড়ি ঘোড়া
তাই সারাতে হয়


গ্যারেজেতে গাড়ি আছে
সারি সারি থাক থাক
নিয়ম যেমন আছে
আছে নিয়মের ফাঁক
পেন্সিল না থেকেও
গাড়ি ঘোড়া চড়া যায়
শম্বুর গ্যারেজে এসে
দেখে যাও ভাই।


গ্যারেজেতে বাইক আছে
আছে বাইকের তেল
করছে কী করছে না
বাইকের ব্রেক ফেইল
বাইকের চাবি আছে
চল মারি চক্কর
কেউ, কেউ ধরা পড়বে না
কেউ যাবে নাতো জেল।


ডাক নাম সুলোয়া
ভাল নাম সুলেমান
নেই কোন পদবী
আছে শুধু সুলেমান
আছে, মেঘ আছে আকাশে
নেই জামার বোতাম
চল, চল যাই ঘুরে আসি
কিরিটি শ্মশাণ।


চুলে হাওয়া লাগলেই
খুলে যায় মন
সরে সরে যায় রাস্তা
সরে সরে লোকজন
বদলায় বিকেলটা
কিছুক্ষণ
বদলায় কপালটা
বদলায় জীবন।




জয়িতা

একটা সবুজ রঙের সেলোয়ার - জয়িতা
একটা কোন মতে টিকে থাকা সংসার - জয়িতা
একটা নড়বড়ে সিড়ি বেয়ে তিনখানা ঘর - জয়িতা
ডাক্তার লেন একশ চার


বাবা তার পেনশন নিয়ে ঘরে পঙ্গু - জয়িতা
মা তার হারিয়ে গেছে আকাশে - জয়িতা
ছোট ভাই নেক আছে অভিনেতা হবে - জয়িতা
ডাক্তার লেন একশ চার
তাই বয়সের সাথে সাথে বাড়ছে দায়িত্ব - জয়িতা
পড়তে বসেনা সে আর তার জানালায়
স্কুল থেকে নাম কাটা গেছে গত মাসে - জয়িতা
এখন সে সুরচিত রান্না করতে যায়
ইংরেজীতে পেত একশতে তিরাশি - জয়িতা
জ্যামিতিতে ছিল তার ঊনআশি - জয়িতা
তাই মাঝে মাঝে রাত্রিরে কান্না পেয়ে যায় - জয়িতা
ডাক্তার লেন একশ চার


রোজ সাত-সকালে উঠে কাজে চলে যেতে হয় - জয়িতা
সবুজ রঙের সেলোয়ার ছেড়া চটি পায়
ষোল বছরে সে স্বাবলম্বী - জয়িতা
ডাক্তার লেন একশ চার
আমি উল্ঠো দিকের জানালায় বসে - জয়িতা
সঙ্গী আমার একটা গীটার - জয়িতা
কখন যে মনে মনে চেয়েছি তোমাকে - জয়িতা
কখন যে গেয়ে ফলি আরও একটা গান
ডাক্তার লেন একশ চার
জয়ি জয়ি জয়িতা
ডাক্তার লেন একশ চার
জয়ি জয়ি জয়িতা আমার

দার্জিলিং এর রাস্তায়

ভেঁজা ভেঁজা কুয়াশায় রেলিং খাদের ধারে
ছোট্ট ছেলের দল লাল সুয়েটার গায়
ইশকুল ব্যাগ নিয়ে ইশকুলে যাবে না
কেটে যাবে সারাদিন দার্জিলিং এর রাস্তায়।


হঠাৎ কুয়াশা, হঠাৎ কাঞ্চনজংগা
ডাকছে তাদের আয় ছুটে আয়
সহজেই খাদ বেয়ে নেমে যাওয়া যাচ্ছে
আজ কেটে যাবে সারা দিন দার্জিলিং এর রাস্তায়।


ছুটে গিয়ে উঠে পড়া যাচ্ছে রেলগাড়ি
ঝুলে ঝুলে চলে যাওয়া যাচ্ছে বাদাসিয়া
পাহাড়ি ঝর্ণাটা ঘিরে লুকোচুরি
হঠাৎ বৃষ্টি ভিঁজে যায় লাল সুয়েটার।


সারি সারি পাইন গাছের শুকনো পাতা
আছে একটা কাঠি আর একটা ভিঁজে দেশলাই
ছিড়ে নিয়ে দুটো অংকের খাতার পাতা
জ্বলবে আগুন, ঠিকই জ্বলবে ভাই।


লাল সুয়েটার স্যাঁতসেঁতে রয়ে যাবে গায়ে
ব্যাগের ভিতর স্যাঁতসেঁতে বই খাতা
তবু মনের ভিতরে ঝলমলে রোদ্দুর নিয়ে
আজ কেটে যাবে সারাদিন দার্জিলিং এর রাস্তায়।


গায়ের সুয়েটার শুকিয়ে যাবে গায়ে
জ্বর এসে যাবে ঠিক ভোর বেলায়
আরও একদিন ইশকুল যেতে হবেনা
কেটে যাবে দিনটা দার্জিলিং এর রাস্তায়
আরও এক দিন সেই দার্জিলিং এর রাস্তায়।

ছোট বাক্স


এই গানটি আমার লেখা নয়। এটি বিশ্ব বিখ্যাত গীতিকার এবং গায়ক পীট সিগারের একটি গান থেকে অনুপ্রাণিত। নিজের মত করে রুপান্তরটা খুব একটা জুতসই হয়নি, কিন্তু মূল গানটা এতই ভাল লাগে সাহস করে গেয়ে ফেললাম।


ছোট বাক্স, ছোট বাক্স
কত বাক্সের এই শহরে
কত স্বপ্ন, কত হতাশা
ছোট বাক্সের ভিতরে।
ছোট ছোট মন
বড় হয়ে যায়
ছোটদের জন্ম দিয়ে যায়,
যারা বড় হয়ে ঢুকে পড়ে
সেই একই বাক্সের ভিতরে।
কেউ ডাক্তার, কেউ মাষ্টার
কেউ করেনা কোন রোজগার,
কিন্তু সবই একই বাক্স
সবই একই রকমের।


ছোট বাক্স, কত বাক্স
ছোট বাক্সের এই দুনিয়ায়
কত তোড়জোড়, কত আয়োজন
ছোট বাক্সের ভিতরে।
কেউ আমেরিকা, কেউ পাকিস্তান
কেউ ভারত, উজবেকিস্তান
কিন্তু সবই একই বাক্স
আরেকটা বাক্সের ভিতরে,
কোনটা হলদে, কোনটা খয়েরী
কোনটা সবুজ, কোনটা বেগুনি
কিন্তু সবই একই বাক্স
সবই এক রকমের।


বড়দের ব্যাপার

ক্রমশ হচ্ছো তুমি বড়
একটু একটু করে রোজ,
ক্রমশ হচ্ছো সরবর
অংক, ইতিহাস ভুগোল।
মোজাটা ছোটখাট হলেও
জগতটা ছোটখাট নয়,
তোমার লেখা-পড়ার বাইরে
রোজ কত কিছু হয়।
তুমি জানছো সব কিছুই
জানচ্ছে বাবা-মা, টিভি,
এখন প্রশ্ন হলো একটাই
তোমার নিজের মতটা কী।
তোমার মতামত জরুরী
হোক তা বড়দের ব্যাপার,
কারণ তুমিও হচ্ছো বড়ো
জগতটা ক্রমশ তোমার।

লা পালোমা জনি

জনাতন দে ডাকে সবাই তাকে বলে জনি
তার কুকুরের নাম কেন কিট কেউ জানে না
কিটকে নিয়ে কিটকিটে বুড়ো জনি
কুড়িয়ে কুড়িয়ে পাড় হয়ে যায় রাস্তা
সারাদিন, রাতে নেশা করে কুপোকাত বুড়ো জনি
সকাল সন্ধ্যে যখন তখন
যদি রাতের আকাশ দেয় বৃষ্টির আভাস কোন দিন
বেজে ওঠে হঠাৎ জনির গ্রামোফোন


লা পা লো মা লা লা
লা লা লা..................


চল্লিশ বছর আগেকার জনাতন জনি
টানটান শরীরে শুধুই ভালবাসা
নাচলে পরে যেত থমকে আমার শহর
জিন ক্যালি আমার কালছে কলকাতায়,
আমার ছোট্ট বেলার সেই লুকিয়ে ফেলা ম্যাকিনি
সপ্তপদী কত কত কখনো মেঘ
তারই হাত ধরে নাচতে শিখেছিল ওয়ান টু চা চা চা
উত্তম কুমার সচিত্রা সেন




লা পা লো মা লা লা লা
লা লা লা.......


আজ বুড়িয়ে গিয়ে তাই কুড়িয়ে হাটে জনি
আসে নাতো কেউ আর শিখতে তার কাছে নাচ
শুধু ফার্নিচারে জমে ওঠে অসংখ্য ধুলো
আর কার্ণিশে গজায় এলোমেলো বট গাছ,
তবু রাতের আকাশ যদি বৃষ্টির আভাস দেয় কোন দিন
বেজে ওঠে জনির ভাঙাচোঙা গ্রামোফোন।
দেয়ালে নাচে পাগলা জনির ছায়া
একলা নাচে পাগলা জনির মন।


লা লা....... লা লা লা.....

কলকাতা ১৬

এ সন্ধ্যের শহর আমার
যে রাস্তায় নিয়ন একাকার
এ রাস্তা বড়ই পুরনো
রাস্তা আমার ছেলেবেলা
এখান থেকে স্বপ্ন দেখা
আলো আঁধারি রেস্তোরায়
এ কলকাতা ১৬ আনার
এ কলকাতা ১৬ আমার।

এখানটাতেই প্রথম দেখা
আমার প্রথম প্রেমিকার
হাত ধরে হাটছে অন্য কেউ
হঠাৎ বড় হয়ে যাওয়া
যন্ত্রণা ভুলতে শেখা
কান্নাটা গিলতে শেখা
ঘুরে ঘুরে ফিরে এই রাস্তা
ভালবাসা খুজে পাওয়া
এ কলকাতা ১৬ আনার
এ কলকাতা ১৬ আনার
এ কলকাতা ১৬ আনার
এ কলকাতা ১৬ আমার।

এখনো কত শনিবার
মুখোমুখি সেই রেস্তোরায়
আলো আঁধারে আমার
ভালবাসার হাত ধরা যায়
এখনো রাতের আকাশ লাল
এখানে বন্ধুত্বের চোখ মাতাল
এখানে মনের ভিতরে এখনো
এখানে বাঁজানো যায় আমার গীটার
এ কলকাতা ১৬ আনার
এ কলকাতা ১৬ আনার
এ কলকাতা ১৬ আনার
এ কলকাতা ১৬ আমার

যেতে হবে

বেশ থাকা, ভাল থাকা চলছে গাড়ির চাকা, নতুন মারুতি
মাঝে মাঝে ফাঁকতালে সামান্য কালো টাকা, এ আর এমন কী
প্রমেোটার ধরে পাকাপাকি ভাবে করে নাও নিজের পৃথিবী
ছেড়ে চলে যেতে হবে তোমায়
সব ফেলে যেতে হবে তোমায়
একদিন দূরে যেতে হবে তোমায়
ছেড়েছুড়ে যেতে হবে তোমায়।


ইন্সটলমেন্টে পাওয়া যায় সবকিছু
বাংলায় যাকে বলে ধার
কোন মতে হাতাহাতি করে যদি পেয়ে যাও একটা ক্রেডিট কার্ড
সিনেমার মতো হয়ে যাবে সন্ধ্যে বেলার জগৎ তোমার।
ছেড়ে চলে যেতে হবে তোমায়
সব ফেলে যেতে হবে তোমায়
একদিন দূরে যেতে হবে তোমায়
ছেড়েছুড়ে যেতে হবে তোমায়।


পকেট না চাইলেও চাইছে তোমার মধ্যবিত্ত মন
চাই যে শরীরের শিরায় শিরায় টিভির বিজ্ঞাপন
এই চাই চাই, খাই খাই, শেষ নেই কোন একটাই জীবন
ছেড়ে যেতে হবে যখন তখন
তুমি জানো না যেতে হবে কখন
ফেলে রেখে দিয়ে সব আয়োজন
চলে যেতে হবে যখন তখন।


জানলায়, দরজায় সাদাকিলো পর্দায়, সাদা সাদা আসবাব সব
তুমি আমি রোজ রোজ মিলেমিশে হয়ে যাব সানন্দার প্রচ্ছদ
এইভাবে তাড়াতাড়ি, কাড়াকাড়ি করে নেব নিজেদের জগৎ
ছেড়ে চলে যেতে হবে তোমায়
একদিন ফেলে যেতে হবে তোমায়
দূরে চলে যেতে হবে তোমায়
সব ফেলে যেতে হবে তোমায়।

হাফ চকলেট

মনে মনে গান গেয়ে যাচ্ছি, খালি পেট
তুমি অন্য দিনের মতো, ইনফেয়ারেপলি লেট
আজ আর আমি ছাড়বনা, পকেটে রাখতে পারব না
তোমার জন্য রেখে দেওয়া হাফ চকলেট।

তুমি ভাবছ নিজেকে কি সংগীতা
এই চৌরাস্তা ছেড়ে, চলে যেতে পারি না
আজকে তোমার ভাঙবে ভুল
চখে দেখবে সর্ষে ফুল
থাকবে মনে চিরকাল এই ডেট।

আমি ভেবে দেখেছি, ভেবে কোন লাভ নেই আর
কখন কী মর্জি হয় হঠাৎ তোমার
আজ দেয়ালের সৌরভ গাঙ্গুলি
কাল লিওনার্দো ডিকেপ্রিও
তার ফাকে ফাকে আমার চকলেট।

এভাবে আর চলব না আমি নো, নো ওয়ে
তুমি যতই চিঠি লিখে যাও, রিকি মার্টিন কে
কেউ উত্তর দেবে না তােমায়,
থাকতে হবে এই কলকাতায়
তখন চাইলেও পাবে না, আমার চকলেট।

ভাবছি, খেয়ে ফেলছি চকলেটটা
আমি যাচ্ছি, ছেড়ে যাচ্ছি চৌরাস্তা
এখন মন আমার আর গলবে না
তুমি যতই খুজ মিলবে না
আমার মতো মনবিদ এই শহরে।

তুমি ভাবছো নিজেকে কি সংগীতা
তোমাকে ছেড়ে থাকতে পারব না
আজকে তোমার ভাঙবে ভুল
তখন চখেতে দেখবে সর্ষেফুল
থাকবে মনে চিরকাল এই ডেট।