অঞ্জন দত্ত, জন্ম: জানুয়ারি ১৯, ১৯৫৩, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত। আরো জানতে
এই ব্লগটা অঞ্জনের গান প্রেমীদের জন্য। আমার হাতে এখন অফুরন্ত সময়, অঞ্জনের গান শুনছি, ভাবলাম লিখে রাখি, পড়া যাবে কিন্তু তাও হচ্ছেনা। পায়ের সাথে চোখের সমস্যায়ও ভুগছি। শুনে শুনে লেখা তাই ভুল থাকবেই, ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

Sunshine

Sunshine on my shoulder makes me happy
Sunshine in my eyes don't make me cry
Snshine on the water looks so lovely
Sunshine almost always makes me high

If i have a date i could give u
I give to u a day just like today
If i had a song that i could sing for u
I sing a song to make u feel this way

রোদ্দুর ভীষণ মিষ্টি ভোরের বেলায়
রোদ্দুর চোখে গেলে কান্না পায়
রোদ্দুর নদীর জলে, জল যায় ঝলসে
রোদ্দুর সারা জীবন আমার চাই

If i have a date i could tell u
I tell a tell sure to make u smile
If i had a wish, i could wish for u
I make a wish for a sunshine all your life

ভালোই আছি

বহুদিন পরে হঠাৎ দেখা হলো
কেমন আছো, ভালো আছো কি?
অবান্তর প্রশ্নটা জিগ্যেস করলাম
তুমিও বললে, তাই আমিও বললাম
চলছে, ভালোই আছি

দুজনেরই মনে আছে দু'জনার অভিমান
রাত জাগা তর্ক, কাক ডাকা ভোরে
ব্যাগ প্যাক করে চলে যাওয়া
ফিরে না থাকিয়ে দেখা কোনদিন। 
দুজনেরই মনে আছে  দরদের গাটছড়া
লজ্জার ভান করা, একসাথে সান করা
নীল আকাশের তারা কত কত রাত দেখেছি।

চারপাশে সবকিছু বুড়ো হয়ে যাচ্ছে
ঘুরতে ঘুরতে ঘুরতে সব গুড়ো হয়ে যাচ্ছে
ভাসছে সমুদ্রে তেল, উড়ছেনা গাংচিল
জ্বেলে জ্বেলে জ্বেলে লাইটার ফেলে দিতে হচ্ছে
আমরাও পারিনি রাখতে জোর করে
চিরটাকালের তরে হৃদয়ের গহ্বরে
কখন যে গেছে মরে আমাদের অগোচরে সুদূরের প্রজাপতি
শধু যদি দং, হৃদয়ং, মম কত অং বং
খালি পেটে উগড়ে গেছি

অবান্তর প্রশ্নটা জিগ্যেস করলাম
তুমিও বললে, তাই আমিও বললাম
চলছে, বেশ ভালোই আছি

চলো বদলাই

তুমি ভেবেছিলে যাবে বদলে যাবে
নতুন করে জীবনের রঙ

আমিও তোমার মত সেই নতুনের অপেক্ষায় ছিলাম,
তবু একটু একটু করে সময়ের অগোচরে
গেলাম পুরোনো হয়ে সবাই।
শুধু বদলে যাওয়ার কথা বারবার
হারিয়ে গেল এক দেয়ালের গায়
তবু বদলে যাওয়ার ইচ্ছে এখনো হঠাৎ কাদায়,
তাই থাক পরে থাক চৌরাস্তার মোড় যেখানে আছে
চলো আমরাই, চলো নিজেরাই বদলাই।


আমি বদলাতে পারি তোমার চোখের ভাষা, তোমার ঠোটের রঙ
তুমি বদলাতে পারো আমার সবকটা জামার বোতাম,
চলো অদল বদল হয়ে যাই তোমার আমার শোবার বসার ঘর
চলো আমরাই, চলো নিজেরাই বদলাই।

আমি বদলাতে পারি নাম, তোমার বদলাত পারি তোমার পদবী
তুমি তোমার ঘর দোর চৌকাঠ বদলাবে কি?
দেখ সময় কেবল সময় শুধু সময় নিয়ে যাবে
চলো আমরাই, চলো নিজেরাই বদলে যাই


দেখ এ জীবনের সময়ের নোংরামি আর হবে না পরিষ্কার
আর জীবনটাও আসবে না ফিরে আমাদের আরেকবার
তাই বদলে ফেলি যে যার বদলে যাওয়ার ভাবনাটাকে
চলো আমারই, চলো নিজেরাই বদলাই।

দুষ্টু গান

সিনেমা সিনেমা সিনেমা
আজ সিনেমার বড়দিন
শুটিং শুরু কলকাতায় বোম্বের হিরোইন

নির্দেশকের দৃঢ় প্রতিজ্ঞা এমন ছবি বানাবে
সারা দেশ জুড়ে সক্কলে একসাথে ট্যারা হয়ে যাবে
সুস্থ চিন্তা ভাবনা নিয়ে কমার্শিয়াল কী তাই
এমন ছবি সম্ভব একমাত্র কলকাতায়
প্রযোজক শুধু একটা কথাই বারবার বলে যান
একটা দুষ্টু গান ঢোকান না দাদা
দুষ্টু গান ঢোকান

একটা দুষ্টু গান ঢোকালে দেখিয়ে দেব সব্বাইকে
ভাল ছবিটাও চলে দুষ্টু গান ঢোকালে

দুষ্টু গানের মতো কিন্তু গপ্প দুষ্টু নয়
দুষ্টুমিটা ধুম করে আমি ঢুকিয়ে দেব কোথায়
গপ্প সেতো গপ্পই দাদা, একটু ঘুরিয়ে দিন
ঠাট্টার ছলে, হাসির ছলে লিখুন দুষ্টু সিন

গানের জন্য গপ্প, না কি গপ্পের জোরে গান
সেটা ঠিক করা আপনার কাজ, আপনিই সামলান
শুটিং হলো মুলতবি, সক্কলে মিলে ভাবে
দুষ্ট গান ঢোকাবে কি করে, দুষ্টু গান ঢোকাবে
দুষ্ট গান ঢোকাবে কি করে, দুষ্টু গান ঢোকাবে
ওরে দুষ্টু গান ঢোকাবে, কি করে দুষ্টু গান ঢোকাবে
দুষ্টু গান ঢোকালে, প্রমাণ করে দেবে সব্বাই
ভাল ছবিটাও চলে, একটা দুষ্টু গান ঢোকালে

নির্দেশকের দাড়ি পেকে যায় সারা দিন রাত ভেবে
কি করে তার ভাল ছবিটাতে দুষ্টিমি ঢোকাবে
এতদিন ধরে ছবির স্বপ্ন, ছবি সে তো বানাবেই
এত সহজে হাল ছেড়ে দেবেনা কিছুতেই
সেই ছেলেবেলা কত দুষ্টুমি করে গেছে দিন রাত
ছবির জন্য একটু দুষ্টু হবেনা কেন সে আজ
সামান্য দুষ্টুমির জন্য গোটা ছবি বরবাদ
যদি হয়ে যায় নেই তার ছবি বানাবার অধিকার
তার গপ্পের গরু গাছে উঠে গিয়ে নাচলো তাধিন ধিন
একটা দুষ্টু গানের সিন লিখা হলো, দুষ্টু গানের সিন
দুষ্টু গানের সিন লিখা হলো, দুষ্টু গানের সিন
ওরে দুষ্টু গানের সিন লিখা হলো, দুষ্টু গানের সিন
কারণ দুষ্টু গান ঢোকালে, প্রমাণ করে দেবে সব্বাই
ভাল ছবিটাও চলে,একটা দুষ্টু গান ঢোকালে

এবার দুষ্টু গানের লোকেশান দূরে হবে, নাকি কাছে
সুইডেন যাবার মুরদটা নেই, দুষ্টু বুদ্ধি আছে
দুষ্টু গানের লোকেশান দূরে নাকি হবে কাছে
সুইডেন যাবার মুরদটা নেই, দুষ্টু বুদ্ধি আছে
কাঠে কাঠ ঠুকে হয়ে গেল সেট ইন্দ্রপুরিতে
সিন লিখা হলো, নায়ক দেখছে দুষ্টু ক্যাবরে
তরতর করে সুর দেয়া হলো, দুষ্টু মিষ্টি গান
প্রযোজক হেসে পিঠ চাপড়ায়, এটাই ছবির জান
তাই পোস্টার হলো প্রচার হলো টিভির পর্দায়
একটা দারুণ ভালো দুষ্টু ছবি হচ্ছে কলকাতায়
সুস্থ ভালো রুচির ছবি দেখতে যদি চান
একটু দুষ্টুমি দেখে যান না দাদা দুষ্টুমি দেখে যান
একটু দুষ্টিমি দেখে যান প্লিজ দুষ্টুমি দেখে যান
তারণ দুষ্টিমি দেখে গেলে,


 প্রমাণ করে দেবেন আপনারা ভাল ছবিটাই চলে

গানওয়ালা

গাইলে তুমি ইচ্ছে করে গাইতে মন আমার
গানটা শুনে গুনগুনিয়ে গানটা হোক সবার
গাইলে তুমি পাই খোজে সময়ের ঠিকানা
গানওয়লা, ও গানওয়ালা, গান থামিও না
চাইনা শুনতে গানটা ছাড়া অন্য কিছু আর
চাইনা বুঝতে স্টেজে কেন উঠছোনাকো আর
চাইনা জানতে যুক্তি তক্ক কোন রটনা
গানওয়ালা, ও গানওয়ালা, গান থামিও না

গান শোনে তোমার গানের কাছে চলে আসা
গানে গানে পরিচয় গানের কাছে থাকা
চাইনা শোনতে অন্য কোন কথা অচেনা
চেনা দুঃখ, চেনা সুখের গান থামিও না

ঝগড়া

ঝগড়া ঝাটি তক্ক বিতক্ক বাক বিতন্ডা চলবে
পাড়ার লোকে যা যাই বলুক, যা চায় বলতে বলবে
তবু তুমি যাবেনা দিল্লী, আমিও না বোম্বে
এক বগ্গা টেরে টক্কা ঝগড়া চলছে চলবে চলবে
দিনটা আজকে ঠান্ডা নাকী বেড়েছে গরম
মাংসাটা সিদ্ধ হয়নি নাকী ভিষনই নরম
এবার পূজো কিরিটিতে নাকী  তেরাদম
লাগ লাগ লাগ, তেরে কেটে তাক ঝগড়া চলছে চলবে
তবু বারবার ভেবে তুমি বলতে পারবে কি
ঝগড়া ছাড়া একটা দিনও বাঁচতে পারবে কে
তবু বারবার ভেবে হবে বলতে হবে
চলে যেতে হবে একদিন

বয়স বাড়তে বাড়তে এখন ঊনসত্তর
সুগার বেড়ে যাচ্ছে বাড়ছে কোলেস্টরল
আর সবছে বেশি বাড়ছে আমাদের গলার জোর
পান থেকে চুন, খসলেই খুন ঝগড়া চলছে চলবে
তোমার ওজন বাড়ছে দেখ, আমি কত ফিট
চেনেল পাল্টালে কেন তোমার মাথায় আছে চিট
পেটটা যাবে বিগড়ে আর খেওনা বিস্কিট
গেরেমা গেরেমা হিং টিং চট ঝগড়া চলছে চলবে
তবু বারবার ভেবে তুমি বলতে পারবে কি
ঝগড়া ছাড়া একটা দিনও বাঁচতে পারবে কে
তবু বারবার ভেবে হবে বলতে হবে
চলে যেতে হবে একদিন

কম্পটাট্টা জড়াও নইলে হেক হেক কর কাশবে
আগে নাক ডাকাটা কমাও তারপর কাছে আসবে
এত দেমাগ কিসের সেইতো আমায় ভালবাসবে
হা হা হো রাম পাম পো ঝগড়া চলছে চলবে
ঝগড়া ঝাটি তক্ক বিতক্ক বাক বিতন্ডা চলবে
পাড়ার লোকে যা যাই বলুক, যা চায় বলতে বলবে
তবু তুমি যাবেনা দিল্লী, আমিও না বোম্বে
এক বগ্গা টেরে টক্কা ঝগড়া চলছে চলবে 
তবু বারবার ভেবে তুমি বলতে পারবে কি
ঝগড়া ছাড়া একটা দিনও বাঁচতে পারবে কে
তবু বারবার ভেবে হবে বলতে হবে
চলে যেতে হবে একদিন

জেরেমির বেহালা

চুপিচুপি রাত নেমে এলে পরে ভাঙা জানলার সাঁড়শিটা খুলে যায় 
কালিঝুলি মাখা ঘরটায় কে যেন আবার হেটে চলে খালি পায় 
মাঝেমাঝে লোডেশেডিং এর রাতে বেজে ওঠে জেরেমির বেহালা 
পাড়া পড়শিরা সব্বাই জানে আসে যায় সেই কালো সাহেবের ভূত, নাকি প্রেত 
মরে গিয়ে বুড়ো হয়নি শান্ত,কে জানে কেন কিসের আক্ষেপ 
তাই মাঝেমাঝে লোডেশেডিং এর রাতে ফিরে ফিরে আসে বেহালার মাস্টার 
লা লা লা লা..........

একদিন এই ঘরময় কত নিছক ছেলেমানুষী আড্ডা 
উঠতো বেজে একসাথে কত কচি হাতের আনকোড়া সোনাটা 
হারানো সে সুর শুনতে চাইলে, বাজাতে চাইলে মনের বেহালাটা 
চলে এসো তুমি রডেন্স স্ট্রিটের কালিঝুলি মাখা পোড়ো বাড়িটায় 
লা লা লা লা........... 

লোভী প্রমোটার হাসফাঁস করে পায়নি খুঁজে বাড়িটার দলিল 
কে জানে কবে কার নামে হয়ে গেছে মর্টগেজ অসহায় উকিল 
বানানো শুনানি কত হয়ে গেল তবু বেড়ে চলে দেয়ালের আগাছা 
বখাটে ছোকরা ঠাট্টা তামাশা কত নিষিদ্ধ সাট্টার নেশা চলে 
তবু সাহস করেনি কেউ এখনও গেট টপকাতে লোডশেডিং হলে 
শুধু দূর থেকে শুনে যায় সব্বাই বুড়ো জেরেমির বেহালা
লা লা লা লা...........

কে জানে কবে ভেঙ্গে দিয়ে এই রঙ্গীন শার্সি পুরনো কড়িকাঠ
বসবে বাজার ব্যাংক নিয়ন আলোয় দোকানপাট জমজমাট
তবু মন বলে চলে যাবে না ফুরিয়ে কোনদিন পুরনো কলকাতা
অলিগলি তুমি কান পেতে দেখ শুনতে পাবে জেরেমির বেহালা
লা লা লা লা...........

পারিনি

পারিনি শেখাতে তোকে সত্যি ভাল কথা কোন, গাইতে একটা সত্যি ভাল গান
পারিনি বোঝাতে তোকে ঈশ্বর আল্লা একই ভালোবাসার নাম
শুধু পারি খুব সহজে তোকে বুজিয়ে দিতে আমি দেশপ্রেমের নাম পখরান

পারিনি ঢোকাতে তোর ছোটো মনে মাথায় বড়ো হয়ে ওঠার সম্বল
পারিনি শেখাতে তোকে মাঝে মধ্যে দিতে একতা ছোটো গাছের গোরায় একটু জল
শুধু পারি খুব সহজে তোকে বুজিয়ে দিতে আমি হকার মানেই জঞ্জাল

পারিনি আমি পারিনি পারিনি পারিনি পারিনি
পারিনি পারিনি পারিনি পারিনি

পারিনি সহজে তোকে বুজিয়ে দিতে কাদের দেশ ছিল আমেরিকা 
পারিনি সহজ করে জানিয়ে দিতে কেন ভাঙা হল বার্লিনের দেওয়ালটা
শুধু পারি খুব সহজে তোর মনে গেঁথে দিতে বেশী টাকা মানেই ভাল থাকা

পারিনি সহজে কেন ফিকে হয়ে যাচ্ছে গান্ধীজ
পারিনি চেনাতে তোকে সে তোর বন্ধু নাকি সে তোর বাড়ির ঝি 
তাই পারছিনা বোজাতে কেন গলায় দড়ি দিল চোদ্দ বছরের টুকটুকি

পারিনি আমি পারিনি পারিনি পারিনি পারিনি
বোজাতে পারিনি পারিনি পারিনি পারিনি পারিনি

কুয়াশা

দূর থেকে ভেসে ভেসে আসা
অদ্ভূৎ সেই গান পাহাড়ি ভাষা
হারিয়ে গেল ছেলেবেলা, কুয়াশা
ছিল সবুজ এক ঠিকানা
খাঁদের ধারে আস্তানা
তোমার খয়েরি চুলের গন্ধ আর কুয়াশা

আজ আমি বড় হয়ে গেছি
নিজের ঘর নিজেই বেধেছি
তবু মনের ভেতর কোথায়, কুয়াশা
খোঁজে ফিরি সেই তোমাকে
তোমার মনে যদি থাকে
দেখা হবে যেন ঠিক আবার, কুয়াশা


পনেরোতে আটকে

পারিনা বোঝাতে তাকে মনের কথা, আমি পারিনা
এত এত কাছে এসে যায় সুযোগটা ফসকে
সারাদিন সারারাত কী যে হিজিবিজি, পেয়ে যায় কেবল কান্না
বাড়ছেনা বয়স, পনেরোতে এসে, গেছে আটকে
কী দিলে যে চলবে, কী দিয়ে যে বলব কথাটা
আরচিজ গ্যালারী ঘুরে ঘুরে নিউ মার্কেট
পাই খোঁজে কত হাবিজাবি পাইনা খোঁজে সাহস
বাড়ছে বয়স পনেরোতে এসে, গেছে আটকে
সাবিনা তোমাকে আমি চাই, বললেই লেটা চুকে যায়
শুধু বলতে পারিনা তোমায়, 
যদি কেউ রাগ করে, যদি কেউ মারে ধরে
ভয়, ভয় ভয় শুধু ভয়

এতদিন বেশ ছিল, কি জানি কি হয়ে গেল হঠাৎ
হাত কাটে, পা কাটে, কাটেনা সময় কিছুতেই
মে মাস কবে গিয়ে এপ্রিল হবে কেউ বলে দাও আমায়
বাড়ছেনা বয়স পনেরোতে এসে গেছে আটকে

কেউ যদি দেখে পেলে, বলে আর চিঠি লেখা হয়না
হ্যালো বলে টেলিফোন ধুম করে রেখে দিতে হচ্ছে
ঘেমে যায় হাত পা, হাটুর ভেতর করে কেবল টনটন
বাড়ছেনা বয়স পনেরোতে এসে গেছে আটকে

ভয় ভয় সারাদিন মনে হয় খালি চুরি করছি
এটা বয়সের দোষ নাকি বরাত আমার গেছে ছঠকে
কবে যে আঠারো হবো, মনে বল ফিরে পাবো বলে দাও আমায়
বাড়ছেনা বয়স পনেরতে এসে গেছে আটকে
সাবিনা তোমাকে আমি চাই, বললেই লেটা চুকে যায়
শুধু বলতে পারিনা তোমায়,
যদি কেউ রাগ করে, যদি কেউ মারে ধরে
ভয়, ভয় ভয় শুধু ভয়

ভালবেসে এত ভয় পেতে হবে আগে জানতাম না
তাই অনেক লজ্জায় কথাটা বলতে হচ্ছে
তাড়াহুড়ো করে যদি পাড় হয়ে যাও বারো, তেরো, চৌদ্দ
বুঝবে আমার কথা পনেরোতে যাবে এসে আটকে
সাবিনা তোমাকে আমি চাই, বললেই লেটা চুকে যায়
শুধু বলতে পারিনা তোমায়,
যদি কেউ রাগ করে, যদি কেউ মারে ধরে
ভয়, ভয় ভয় শুধু ভয়.........ভয়

শেষ গাছ

শেষ গাছটা কাটা হয়ে যাবে যখন
শেষ মাছটা যখন জালে পড়বে
শেষ জন্তুটা জবাই হয়ে গেলে তারপর
কী দিয়ে তুমি পেট ভরবে
শেষ জঙ্গল কাটার উদ্যোগে
শেষ ঝর্ণাটা হয়ে গেলে চোট
খাবার জন্য শুধু থাকবে তোমার কাছে
কড়কড়ে টাকার নোট

হায় হায় এ কী শুধু কড়কড়ে টাকার নোট
বলো পেট ভরবে কি, দিয়ে কড়কড়ে টাকার নোট

শেষ যুদ্ধটা জেতা হয়ে যাবে যখন
শেষ পারমাণবিক সংকট
হয় খেতে হবে শুধু মরুভুমি
নয় কড়কড়ে টাকার নোট

কেউ খাবে এক টাকা দুই টাকা
কেউ খেতে পাবে শুধু পঞ্চাশ
যার আছে বেশি খাও পাঁচশ
যার আছে কম, খাও দশ

খেতে হবে টাকা, শুধুই টাকা
শুকনো টাকা, শুধু টাকা
টাকার সাগর, টাকার মাছ
টাকার পাহাড়, টাকার গাছ

যদি দেখ হঠাৎ সেই টাকার মরুতে
উকি মারছে ছোট্ট হলদে ফুল
যেন সেটাই তোমার নিজের বিভ্রান্তী যুগের ভুল

তুমি দেখেছ কি

তুমি দেখেছ কি হাটুজলে এক লয়েল স্ট্রীট
তুমি দেখেছ কি বর্ষায়
তুমি চড়েছ কি আব্দুল মান্নান হোসেনের
ভাঙা-চুড়া রিক্সায়
একবার নাও শুনে নাও তুমি ফুটপাতের ধারে
আলতাফ ফকিরে বাঁশি
একা লাগবেনা আর, একা থাকবেনা আর
তোমার এই পঁচা কলকাতায়

কালো আকাশের গায়ে গোলাপী
ঘুড়িটা দেখেছ কি
ডিজেলের ধুয়া অগ্রাহ্য করা
সেই লেংটা ছেলেটার হাসি
ভুলিয়ে দেবে তোমাকে পঞ্চাশ বছরের
মিথ্যে কথার রাজনীতি
কারণ এখান থেকেই দুটো কমলা কিনে
বাড়ি ফিরে বিমলা
সাড়া রাত্রির কেটে খরচা মেটায়
তার পঙ্গু স্বামীর চিকিৎসায়
একবার দেখে যাও সেই একলা মেম সাহেবের বাড়ি
ছত্রিশ চৌরঙ্গী লেন
একা লাগবেনা আর, একা থাকবেনা আর
তোমার এই পঁচা শহরে

গরিয়া হাটার মোড় হয়ে গেছে সাফ
তবু মনের ভিতরে জন্জাল
যখন তখন যায় ফসকে আমাদের
মন মাথা হৃদয়ের হাল
তবু মিথ্যে হয়ে যায় হঠাৎ করে
তোমার আমার চোখের জল
কারণ এখান থেকেই শুরু তোমার আমার
সোনার কেল্লার অভিযান
এখান থেকেই শুনতে পাই আনান ভিখারির
তিন পয়সার পালা গান
এ যতই জ্বালাক, এ যতই পোড়াক
ভুলিয়ে দেবে সব ব্যর্থতা
এযে অন্য কোথাও নয়, অন্য কোন দেশ
তোমার পঁচা কলকাতায়